রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

পশ্চিমারা আ’লীগকে সরিয়ে গোলামদের বসাতে চায়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ,ফাইল ছবি

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

নির্বাচন সামনে রেখে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতার কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন বা গণতন্ত্র নয়, দেশের উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। আওয়ামী লীগকে সরিয়ে তাদের কিছু পদলেহনকারী গোলামদের ক্ষমতায় বসাতে চায় তারা। আর ভারত মহাসাগর-বঙ্গোপসাগরের মধ্যে থাকা দেশগুলোতে আক্রমণ ও অশান্তি করে দেশগুলোকে ধ্বংস করতে চায়। এ দেশকেও ধ্বংস করতে চায়। দেশপ্রেমিক জনগণকে এসব বুঝতে হবে, সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

বিএনপি আগামী নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, বিএনপি জানে নির্বাচনে তারা জিততে পারবে না। তাই আন্দোলনের নামে নির্বাচন বন্ধ করা কিংবা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তারা। যারা ভোট চুরি করে দুইবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে তাদের মুখে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।

গতকাল বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু দেশের নানামুখী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনো খেলা খেলে জনগণের ভাগ্য যাতে কেউ কেড়ে না নিতে পারে, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে– সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে।

নির্বাচন সামনে রেখে আসা বিদেশি প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে অনেকে উতলা হয়েছেন। তাদের কাছে প্রশ্ন– ২০০১ সালে যখন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে নির্যাতন করা হয়েছে, তখন তো নির্বাচন নিয়ে তাদের এত মাথাব্যথা ছিল না। ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়ার বিতর্কিত নির্বাচন নিয়ে তো তাদের এমন চেতনা দেখিনি। খালেদা জিয়ার ভুয়া ভোটার নিয়েও তো তাদের কোনো উদ্বেগ দেখিনি। এ দেশের যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালাল, তাদের সঙ্গে বসতে হবে কেন?

দেশের স্বার্থ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে নানা রকম চক্রান্ত আছে। অনেকে এটিকে ব্যবহার করতে চায়। আমাকে ক্ষমতা থেকে সরাবে আর তাদের পদলেহনকারীদের ক্ষমতায় আনবে। এখানে বসে আশপাশের দেশগুলোতে আক্রমণ করে ধ্বংস করবে। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই তাদের এত টালবাহানা। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা তাদের পছন্দ নয়। এদের উদ্দেশ্য, নির্বাচন বা গণতন্ত্র নয়। এরা উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়।

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের একজন কুলাঙ্গার সুদখোর আছেন। শ্রমিকের অর্থ মেরে খান, ট্যাক্স দেননি। গরিব থেকে উচ্চসুদে টাকা নিয়ে মেরে দিয়ে বিদেশে পাচার করেন। তিনিও তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) প্রিয় ব্যক্তি। আমরা কাজ করি, মানুষের কল্যাণে।

বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিয়োগান্ত ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেদিন ঘাতকের বুলেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এ ধরনের জঘন্য ঘটনা বাংলার মাটিতে ঘটে যায়। এটি সেই কারবালার ঘটনাকেও হার মানায়।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা আমাদের বাড়িতে সব সময় ওঠাবসা ও খাওয়া-দাওয়া করেছে, তারাই বেইমানি করেছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান না মেনে খুনি মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। জিয়াউর রহমানকে বানালেন সেনাপ্রধান। এতেই বোঝা যায়, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মীরজাফর যেমন তিন মাসের বেশি থাকতে পারেনি, তেমনি মোশতাকও পারেননি। জিয়া উর্দি পরে ক্ষমতা দখল এবং পরে নিজেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। আর্মি রুলস ভঙ্গ করে একটা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন। ভোট কারচুপি ও ভোট চুরি তো সেখান থেকে শুরু। এরপর বিএনপি নামক সেই দল করেন।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর খালেদা জিয়ার আসল রূপ বের হলো। ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন শুরু করলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের সময় জন্মতারিখ ১৫ আগস্ট উল্লেখ করেননি। সার্টিফিকেটেও নেই। এমনকি ফার্স্ট লেডি হিসেবে তিনি যে পাসপোর্ট করেছেন, সেখানেও ১৫ আগস্ট জন্মদিন ছিল না। ক্ষমতায় আসার পর মিথ্যা উৎসব শুরু করেছে জঘন্য হত্যাকাণ্ডের দিন। কত জঘন্য এটা! আজকে তাদের কাছে মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়। মানবাধিকার সে সময় কোথায় ছিল?

টানা তিন মেয়াদে তাঁর সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, শত ব্যথা-বেদনা মুখ বুঝে সহ্য করে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। কতবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। যতক্ষণ বেঁচে আছি, ততক্ষণ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির এবং মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION